রসায়ন (ইংরেজি: Chemistry) জড় পদার্থের উপাদান, কাঠামো, ধর্ম ও পারস্পরিক ক্রিয়া-বিক্রিয়া সংক্রান্ত বিজ্ঞান। রসায়নবিদেরা মনে করেন বিশ্বের যাবতীয় বস্তু পরমাণু দিয়ে গঠিত। দুই বা ততোধিক পরমাণু রাসায়নিক বন্ধন দ্বারা সংযোজিত হয়ে অণুর সৃষ্টি করে। এক বা একাধিক ইলেকট্রন পরমাণু বা অণু থেকে সরিয়ে নিলে বা যোগ করলে আধানযুক্ত কণা তথা আয়ন সৃষ্টি হয়। ধনাত্মক আয়ন ও ঋণাত্মক আয়নের সংযোগে সৃষ্টি হয় আধান-নিরপেক্ষ লবণ। রসায়নবিদেরা আণবিক ও পারমাণবিক স্তরে পদার্থ সম্পর্কে তাঁদের জ্ঞান দিয়ে কীভাবে বিভিন্ন ধরনের পদার্থ একে অপরের সাথে ক্রিয়া করে এবং এগুলি কীভাবে বিভিন্ন অবস্থায় রূপান্তরিত হয়, তা ব্যাখ্যা করতে পারেন। রসায়নবিদেরা পদার্থের পরিবর্তন সাধন করতে পারেন ও নতুন নতুন যৌগ সৃষ্টি করতে পারেন যাদের মধ্যে আছে ঔষধ, বিস্ফোরক, প্রসাধনী ও খাদ্য। রাসায়নিক সংশ্লেষণ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন শিল্পে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন করা হয়।
Chhatarpaiya High School
পদার্থবিজ্ঞান কি
পদার্থবিজ্ঞান (ইংরেজি: Physics) পদার্থ ও তার গতির বিজ্ঞান।[১] এর ইংরেজি পরিভাষা Physics শব্দটি গ্রিক φύσις (ফুঁসিস) অর্থাৎ "প্রকৃতি", এবং φυσικῆ (ফুঁসিকে) অর্থাৎ "প্রকৃতি সম্পর্কিত জ্ঞান" থেকে এসেছে। অত্যন্ত বিমূর্তভাবে বলতে গেলে, পদার্থবিজ্ঞান হল সেই বিজ্ঞান যার লক্ষ্য আমাদের চারপাশের বিশ্বকে বোঝার চেষ্টা করা।[২]
পদার্থবিজ্ঞান জ্ঞানের প্রাচীনতম শাখাগুলির একটি এবং এটির সবচেয়ে প্রাচীন উপশাখার আধুনিক নাম জ্যোতির্বিজ্ঞান।[৩] প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা মানুষের আদিমতম কাজের একটি, তবে পদার্থবিজ্ঞান বলতে বর্তমানে যাকে বোঝানো হয় তার জন্ম ১৬শ শতাব্দীর বৈজ্ঞানিক বিপ্লবোত্তর-কালে, যখন এটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণকারী একটি বিজ্ঞানে পরিণত হয়[৪] তার আগে প্রকৃতি নিয়ে গবেষণার সাধারণ নাম ছিল প্রাকৃতিক দর্শন, যাকে ঠিক বিজ্ঞান বলা যায় না।
গণিত কি
গণিত (ইংরেজি: Mathematics) পরিমাণ, সংগঠন, পরিবর্তন ও স্থান বিষয়ক গবেষণা। গণিতে সংখ্যা ও অন্যান্য পরিমাপযোগ্য রাশিসমূহের মধ্যকার সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়। গণিতবিদগন বিশৃঙ্খল ও অসমাধানযুক্ত সমস্যাকে শৃঙ্খলভাবে উপস্থাপনের প্রক্রিয়া খুজে বেড়ান ও তা সমাধানে নতুন ধারনা প্রধান করে থাকেন। গাণিতিক প্রমাণের মাধ্যমে উক্ত ধারনাগুলো সত্যতা যাচাইকরন করা হয়ে থাকে। গাণিতিক সমস্যা সমাধান সম্পর্কিত গবেষণায় বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ বা শত শত বছর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।
গণিতের সার্বজনীন ভাষা ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা একে অপরের সাথে ধারণার আদান-প্রদান করেন। গণিত তাই বিজ্ঞানের ভাষা।
১৭শ শতক পর্যন্তও কেবল পাটীগণিত, বীজগণিত ও জ্যামিতিকে গাণিতিক শাস্ত্র হিসেবে গণ্য করা হত। সেসময় গণিত দর্শন ও বিজ্ঞানের চেয়ে কোন পৃথক শাস্ত্র ছিল না। গাণিতিক শাস্ত্রগুলির গোড়াপত্তন করেন প্রাচীন গ্রিকেরা, মুসলিম পণ্ডিতেরা এগুলি সংরক্ষণ করেন, এবং খ্রিস্টান পুরোহিতেরা মধ্যযুগে এগুলি ধরে রাখেন। ১৭শ শতকে এসে আইজাক নিউটন ও গটফ্রিড লাইবনিৎসের ক্যালকুলাস উদ্ভাবন এবং ১৮শ শতকে অগুস্তঁ লুই কোশি ও তাঁর সমসাময়িক গণিতবিদদের উদ্ভাবিত কঠোর গাণিতিক বিশ্লেষণ পদ্ধতিগুলির উদ্ভাবন গণিতকে একটি একক, স্বকীয় শাস্ত্রে পরিণত করে। তবে ১৯শ শতক পর্যন্তও কেবল পদার্থবিজ্ঞানী, রসায়নবিদ ও প্রকৌশলীরাই গণিত ব্যবহার করতেন।
১৯শ শতকের শুরুতে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের যে আধুনিক ধারা সূচিত হয়, সে-সংক্রান্ত গবেষণাগুলির ফলাফল প্রকাশের জন্য জটিল গাণিতিক মডেল উদ্ভাবন করা হয়। বিশুদ্ধ গণিতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণায় জোয়ার আসে। অন্যদিকে ২০শ শতকের মাঝামাঝি সময়ে কম্পিউটারের আবিষ্কার এ-সংক্রান্ত সাংখ্যিক পদ্ধতিগুলির গবেষণা বৃদ্ধি করে।
Subscribe to:
Posts (Atom)